১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,রাত ১০:৪২

কয়রায় ২৫ স্লুইসগেটের ৮ টি অকেজো ঝুকিপুর্ণ ১৭

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

 

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রা উপজেলার ১২১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে ২৫টি স্লুইস গেট রয়েছে। এর মধ্যে ৮ টি অকেজো এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ১৭ টি। ষাটের দশকে নির্মিত স্লুইসগেট গুলি ঝুকিপুর্ন হয়ে পড়েছে। ফলে লোনা পানি থেকে ফসল রক্ষা ও মিষ্টি পানি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

খালগুলোয় পানি প্রবাহ না থাকায় আমন আবাদে বিঘ্ন ঘটছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ১৩-১৪/২ পোল্ডারে ১৬টি স্লুইস গেটের মধ্যে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন, নয়ানি, কুশডাঙ্গা, কাঠমারচর এবং ১৪/১পোল্ডারে
সাতটি স্লুইস গেটের মধ্যে ওড়াতলা, পদ্মপুকুর, বিনাপানি ও হাজতখালী সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে। দির্ঘদিন অকেজো এসব স্লুইস গেট পুনর্নির্মাণের কোনো সম্ভাবনা নেই। কোনো রকমে পানি নিষ্কাশন চালু থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে নাকশা, মসজিদকুড়, আমাদী, খোড়লকাঠী, শালুকখালী, হোগলারখাল, লালুয়া, নারায়ণপুর, গোবিন্দপুর, সুতিবাজার, গড়ীয়াবাড়ী, জোড়শীং ও কয়রা স্লুইস গেট। সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ স্লুইস গেট ভাঙা-চোরা, কোনোটির একটি দিয়ে পানি ওঠানামা করলেও অন্যটি ভাঙা। আবার অনেকাংশে দেখা যায়, দুটি গেটই সম্পূর্ণ আটকানো।
এগুলো কখনো ওঠানো কিংবা নামানো যায় না। এগুলোতে মরিচা ধরে আটকে রয়েছে। ভাঙা গেট দিয়ে সব সময় জোয়ারের পানি ভেতরে প্রবেশ করে ও ভাটা হলে নেমে যায়। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশির ভাগ অকেজো হয়ে পড়েছে।

তদারকির অভাবে এসব মূল্যবান সম্পদ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কয়রা উন্নয়ন সন্ময় সংগ্রাম কমিটির সাধারন সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, নব্বইয়ের দশকে বেশির ভাগ স্লুইস গেট নির্মিত হলেও পরে তা আর মেরামত করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে আনেক গুলি স্লুইস গেট একেবারে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। সচল গুলোর বেশির ভাগ পাট ভেঙে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ৬ নং কয়রা গ্রামের কৃষক শেখ আব্দুল বারী বলেন, আমন আবাদের মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ স্লুইস গেট
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পানি সঠিক ভাবে সরবরাহ করতে পারছেনা। সঠিক ভাবে পানি সরবরাহ করতে না পারলে আমন আবাদ ব্যহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ আব্দুল্যাহ আল মামুন জানান, কয়রা উপজেলায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ১৬ হাজার ২৩৫ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৭৭
হাজার ৯৯১.৯৫ মেট্রিকটন। লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। প্রণোদোনা কার্যক্রমের আওতায় ৪ হাজার ১২৫ জন কৃষকের মাঝে বিনামুল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
কৃষকদের আদর্শ বীজতলা তৈরির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে রোপা আমনের লক্ষমাত্রা অর্জন করে আরও বাড়তি ফলন পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
উত্তর বেদকাশী ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, গড়িয়াবাড়ি স্লুইস গেটটি কয়রা ও উত্তর বেকাশী ইউনিয়নের সীমানায় অবস্থিত । উক্ত গেটদিয়ে ২ ইউনিয়নের কয়েক হাজার বিঘা জমির পানি সরবরাহ করে থাকে। দিনদিন স্লুইস
গেটটি মেরামত না করায় ঝুকিকপুর্ন হয়ে পড়েছে।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ১৪/১ পোল্ডারে অবস্থিত স্লুইস গেট গুলি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের কাজ শুরু হবে। বাকী স্লুইস গেটের তালিকা তৈরী করে মেরামতের জন্য বরাদ্ধ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে কাজ শুরু হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা দ্রুত কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

  • শেয়ার করুন