৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার,রাত ৮:৪৫

উপকুলীয় জনপদ কয়রায় প্রথম বারের মতো চাষ হচ্ছে সুপার ফুড কিনোয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২২

  • শেয়ার করুন

 

কয়রা প্রতিনিধিঃ উত্তর আমেরিকায় বেশ
জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কিনোয়ার চাষাবাদ। সেই
কিনোয়ার ফসল নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা
ইনস্টিটিউট এর সার্বিক সহযোগিতায় কয়রায়
প্রথমবারের মত চাষ হচ্ছে সুপার ফুড উত্তর আমেরিকার কিনোয়া। জানা গেছে, কিনোয়া একটি জনপ্রিয় পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধি ফসলশস্য দানা। এই ফসল ধান জাতের শস্য ফসলের চেয়েও লাভ জনক। বাংলদেশে কৃষিতে এসেছে বৈচিত্র্যতা।

আগামীতে বিশ্ব কৃষি অর্থনীতিতে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়ে ঘুরে দাড়াবে। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে কিনোয়া ফসলের উৎপাদন। শের-
ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ ৫ টি বছর ধরে
কিনোয়া জাতের ফসল নিয়ে গবেষণা করছে। সেই
গবেষণার পর মাঠ পর্যায়ে গত বছর কিছু চাষ করা হয়। কিন্তু এ বছর ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় চাষ শুরু করছে কয়রার চাষীরা।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক সহকারি জাহিদ হাসান বলেন, এটি উচ্চমান সম্পুর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য ও ক্যালরি যুক্ত দানাদার খাবার। ভাত, রুটির বিকল্প হিসেবে ইউরোপ, আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, চীন ও ভারতের মানুষ এটা খায়।

কিনোয়া ফসলের শস্য দানার রং তিন ধরনের হয়ে থাকে, সাদা, লাল ও কালো। কয়রা উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের কৃষাণী টুম্পা রাণী
সরদার জানান, কিনোয়া সম্পর্কে তার পূর্বে কোন
ধারনা ছিল না। আমার বাড়ির মাঠে চাষ করছিলাম এমন সময় সরেজমিন গবেষণা বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিনোয়া লাভ জনক ফসল। তাদের পরামর্শে নিজ বাড়ীর জমিতে কিনোয়া চাষ করেছি। গবেষণা বিভাগ ইতিমধ্যে বীজ ও সার সহায়তা দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ফসলের চাষ পদ্ধতি শিখিয়েছে। তবে এই কিনোয়া চাষে কোন রাসায়নিক সারের ব্যবহার করা হয়নি। শুধু জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে।

সরেজমিন গবেষণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুস্তফা কামাল শাহাদাৎ বলেন, কিনোয়া লবণ ও খরা সহনশীল। এ জন্য এ ফসল চাষ করলে কৃষকরা লাভবান হবে।

কিনোয়ার আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ জানান, কিনোয়া হলো হাই প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। এটিকে সুপার ফুডও বলা হয়। কিনোয়াতে আ্যামিনো এ্যাসিড থাকে এবং লাইসিন সমৃদ্ধ , যা সারা শরীরজুড়ে স্বাস্থ্যকর টিস্যু বৃদ্ধিতেক সহায়তা করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারি। কিনোয়া আয়রন, ম্যাগ নেশিয়াম, ভিটামিন ই, পটাশিয়াম এবং ফাইবারের একটি উৎকৃষ্ট উৎস। রান্না করা হলে এর দানা গুলো আকারে চারগুন হয়ে যায়। খরা ও লবণাক্ত অঞ্চলসহ সারাদেশে রবি মৌসুমে এ ফসলটি চাষ করা সম্ভব হবে।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ঝুকিপূর্ণ দেশসমুহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সেক্ষেত্রে খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসল হিসেবে সম্ভাবনায় হয়ে উঠতে পারে নতুন ফসল কিনোয়া। তাই কয়রায় প্রথম বারের মতো শুরু করা হয়েছে এই দানাজাত ফসল। আগামীতে আরও অনেক জায়গায় কিনোয়া চাষাবাদ শুরু করা হবে।

  • শেয়ার করুন