প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩
পুলিশ আ’লীগের পেটোয়া বাহিনীর ভূমিকায় জনগনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে : আমীর খসরু
বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিনাউস্কানিতেই পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং টিয়ারগ্যাস ও শটগানের গুলিবর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ৩০জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০/১২জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী পুলিশ সাংবিধানিক দায়িত্ব ভুলে ভোটডাকাত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের রক্ষাকারী হিসেবে পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত এ বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলে পুলিশ সম্পূর্ণ বিনাউস্কানিতে নিরীহ নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটিয়ে রবারবুলেট বর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ১০/১২জনকে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, পুলিশী হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১০দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার (১৯ মে) বিকেল ৪টার দিকে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়। মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. এসএম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল আলম তুহিন ও জেলার সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খান।
কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি সফলে কেএমপি কমিশনার বরাবর চারটি স্থান ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। পূর্বনির্ধারিত স্থানে অনুমতি না পাওয়ায় ও পুলিশের আক্রমনাত্মক মনোভাবের কারণে তাৎক্ষনিকভাবে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। দুপুরের পর থেকেই স্যার ইকবাল রোডস্থ খুলনা প্রেসক্লাবের আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ জমায়েত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রবেশে বাঁধা দিতে শুরু করে। পুলিশী বাঁধা উপেক্ষা করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই, ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার পতন হোক- এমন গগণবিদারী স্লোগানে মুহুর্তেই হাজার হাজার নেতাকর্মী জমায়েত হয় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে। পিকচার প্যালেস মোড়ের দিক থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসার সময় বিনাউস্কানীতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে নেতাকর্মীরা দিক-বিদিক ছোটাছুটি শুরু করলে নিরীহ নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ নির্বিকারে গুলিবর্ষণ করে। অসংখ্য টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী আহত হন। গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত জখম হয়েছেন অন্তত ৩০ থেকে ৩৫জন নেতাকর্মী। পুলিশের মারমুখী আচরণের কারণে বিএনপি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ খুলনা প্রেসক্লাবে ঢুকে আশ্রয় নেন। এসময়ে স্যার ইকবাল রোড, বেনীবাবু রোড, মির্জাপুর, ফুলমার্কেট, সিটি কলেজের সামনে খানজাহান আলী রোড, পিকচার প্যালেস মোড়সহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপি’র অন্তত ১০ থেকে ১৫জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। এরপর বিক্ষিপ্ত নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খান ও সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীর নেতৃত্বে নগরীর জাতিসংঘ শিশুপার্কের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী পুলিশ সাংবিধানিক দায়িত্ব ভুলে ভোটডাকাত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের রক্ষাকারী হিসেবে পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত এ বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলে পুলিশ সম্পূর্ণ বিনাউস্কানিতে নিরীহ নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটিয়ে রবারবুলেট বর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ১০/১২জনকে। এভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার মসনদে টিকিয়ে রাখা যাবে না। জনবিস্ফোরণের মাধ্যমে ভোটডাকাত ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে।
খুলনা মহানগর বিএনপি’র সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, বিনাউস্কানিতে পুলিশ বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পণ্ড করতে গুলি ও টিয়ারগ্যাস বর্ষণ এবং নির্বিকারে লাঠিচার্জ করেছে। এতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ক্লিনিকে নেয়া হচ্ছে। তাই এখনি আহতের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। পরবর্তীতে প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানানো হবে।