১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার,রাত ৯:৩৭

কয়রায় বোরো চাষাবাদে বাম্পার ফলন; কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪

  • শেয়ার করুন

কয়রা প্রতিনিধিঃ দেশের দুর্যোগ প্রবনতা এলাকা বলে পরিচিত খুলনার উপকুলীয় জনপদ কয়রায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে বোরা চাষাবাদ করা কৃষকরা বেশ খুশি। কয়রা উপজেলা
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কয়রার
৭ টি ইউনিয়নে ৫৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা
হয়েছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু
হয়েছে। তবে কৃষকরা বলছেন, অনেকের কাছ থেকে ধার দেনা করে বোরা ধান চাষ করা হয়েছে। এ বছর বেশি দামে সার-ডিজেল কেনা ও সেচসহ ধান চাষে এবার অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে তাদের। তারপরেও বাম্পার ফলনে ধান চাষ করে লাভবান হবে চাষিরা এমনই মন্তব্য কৃষকদের।

সরেজমিনে ৭ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সোনালী ধানে ধুলছে ফসলি মাঠ। অনেকে ইতোমধ্যে ধান কাটছে। আবার অনেকেই ধান মাড়াই করছে। যাদের জমির ধান এখনও কাটেনি তাদের প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলছে ধান। আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন। তবে অনেক এলাকায় পানির যোগান না দিতে পারায় অনেকের রোপা বোরা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আগামীতে পানির ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট।

মহারাজপুর ইউনিয়নে এবার ৩ শ হেক্টর জমিতে বোরা ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড রুপালী-৭, ব্রিধান-৬৭ ও বিনা-১০ চাষ করে কৃষকরা ভাল ফলন পেয়েছে। মহারাজপুুর গ্রামের কৃষানী নাসরীন খাতুন বলেন, এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে সারের দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিজেলসহ অন্য সব সামগ্রীর দাম বেশি ছিল। এমনকি ধান রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমীকদের মজুরি বেশি। ধান কাটতে একজন শ্রমীককে ৬০০-৭০০ টাকা মজুরি দিতে হয়। ফলে ধান চাষ করতে যে টাকা খরচ হয়, তা উঠানো খুব দুরহ ব্যাপার। তার প্রতিবিঘা জমিতে রুপালী চাষ করে ৩০ মন পর্যন্ত ধান উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। সে জন্য তিনি ধান চাষ করে লাভবান হবেন। গোবিন্দপুর গ্রামের মিজানুর রহমান সানা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। চারা রোপণে খরচ বেশি হয়েছে। শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হয়েছে। সেইসঙ্গে সারও কিনতে হয়েছে বেশি দামে। তারপরেও এ বছর ১ বিঘা জমিতে ২৫ মন ধান উৎপাদন করতে পেরেছে।

মহারাজপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, বোরা ধান চাষাবাদে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ হতে কৃষকদের পাশে গিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বছর কয়রার ধান ভাল হয়েছে তাতে স্থানীয় কৃষকরা বেশ খুশি। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বছর কয়রার ৭ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকদের বিনামুল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে কয়রার বোরো উৎপাদনে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আগামীতে এর চেয়ে আরও বেশি জমিতে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হবে

  • শেয়ার করুন