প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২
উপকুল ডেস্ক : জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ অন্য যে কোন ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ থেকে লাভজনক। আপনি আপনার মোট বিনিয়োগের ন্যূনতম ৫-১০% অর্থ নিশ্চিন্তে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। সাধারণ নারীদের জন্য পরিবার সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এই তিন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
পুরুষরা ০৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও ০৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র রয়েছে। অন্যদিকে সরকারি মহিলা এবং পুরুষ কর্মচারীগণ (অবসরপ্রাপ্ত) উপরোক্ত সঞ্চয়পত্র ছাড়াও পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। পেনশনারগণের পরিবারের সদস্যগণও পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন।
পরিবার সঞ্চয়পত্রে প্রতি লাখে ৯১২ টাকা মুনাফা
আপনি যদি মহিলা হয়ে থাকেন বা আপনার স্ত্রীর নামে ০৫ বচর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র কিনেন তবে ভাল মুনাফা পাবেন। একক নামে সর্বমোট বিনিয়োগ ০৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে প্রতিমাসে মুনাফা বাবদ ৯১২ টাকা পাবেন এবং এতে ১১.৫২% বার্ষিক সরল হারে মুনাফা প্রযোজ্য । উৎসে করসহ মুনাফা আসবে ৯৬০ টাকা। ৫% উৎসে কর বাদ দিয়েই আপনার ব্যাংক হিসাবে প্রতিমাসে ৯১২ টাকা ঢুকবে।
আপনার একক নামে সর্বোমাট বিনিয়োগ ৫,০০,০০১-১৫ লক্ষ পর্যন্ত হলে প্রতি লাখে ভ্যাট বাদে মাসিক ৮৬৪ টাকা করে পাওয়া যাবে। এটি অবশ্যই ৫ লক্ষ পরবর্তী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মুনাফা। আপনার বিনিয়োগ যদি আরও বেশি হয় অর্থাৎ ১৫ লক্ষ ১ টাকা হতে ৩০ লক্ষ পর্যন্ত হয় তবে প্রতিমাসে লাখে ৭৮৭.৫০ টাকা পাবেন এবং মুনাফা রেট ১০.৫%। এ মুনাফা ১৫ লক্ষ টাকার উপরের বিনিয়োগের টাকার উপর প্রযোজ্য। বিনিয়োগ যদি ৩০ লক্ষ টাকা ক্রস করে তবে ৩০ লক্ষ টাকার উপরের বিনিয়োগের জন্য ৭১২.৫০ হারে প্রতিমাসে এ লক্ষ টাকা হারে পাবেন এবং মুনাফা রেট ৯.৫%। আপনি পরিবার সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবেন। ৪৫ লক্ষ টাকার অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোন মুনাফা পাওয়া যাবে না। বিনিয়োগ যত বাড়বে মুনাফার হার তত কমবে।
৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে প্রতি লাখে ২৬২২ টাকা মুনাফা
তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই বিনিয়োগ করতে পারে। একক নামে সর্বমোট বিনিয়োগ ০৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে প্রতি লাখে ৩ মাস পর পর ২৬২২ টাকা পাওয়া যাবে ৫% আয়কর কর্তন করার পর এবং মুনাফার হার ১১.০৪%। বিনিয়োগ যদি ৫লক্ষ টাকা অতিক্রম করে অতিক্রমকৃত বিনিয়োগের উপর প্রতি লাখে ৩ মাস পর পর পাওয়া যাবে ২৪৮৪ টাকা এবং মুনাফা রেট ১০% প্রযোজ্য হইবে। বিনিয়োগ আরও বেড়ে ৩০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে লাখে তিন মাস পর পর পাওয়া যাবে ২০২৫ টাকা এবং মুনাফা রেট ৯%। যদিও মুনাফা ধরা হবে বিনিয়োগের স্ল্যাব অনুসারে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে প্রতি লাখে ২৯৪০ টাকা মুনাফা
পেনশনার সঞ্চয়পত্রের শুধু অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা কর্মচারী বিনিয়োগ করতে পারে। এক্ষেত্রে পেনশন বই বা এ সংক্রান্ত প্রমানক প্রয়োজন পড়বে। পেনশনারের মৃত্যুতে তার পরিবারও সেই অর্থ দিয়ে পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন। প্রতি তিন মাস পর পর লাখে ২৯৪০ টাকা পাওয়া যাবে এবং মুনাফার হার ১১.৭৬% এবং এটি ৫ বছরের জন্য বিনিযোগ করতে হয়। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত তাই ২৯৪০ টাকা আসে। বিনিয়োগ ৫ লক্ষ টাকার উপরের হলে অবশিষ্ট বিনিয়োগের উপর ৫% হার কর প্রযোজ্য হইবে বিনিয়োগের মুনাফা হইবে ১০.৭৫%। প্রতি ৩ মাস পর পর পাওয়া যাবে ২৬৪৬ টাকা এবং ১৫ লক্ষ অতিক্রম করলে পাওয়া যাবে ২৪১৮.৭৫ টাকা। বিনিয়োগ করা যাবে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তবে বিনিয়োগ ৩০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে ৩ মাস পর পর লাখে পাওয়া যাবে ২১৯৩.৭৫ টাকা। মুনাফা হার হবে ৯.৭৫%।
৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে প্রতি লাখে মুনাফা ৫৩,৫৮০ টাকা মুনাফা
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কেবল জেলা সঞ্চয় ব্যুরো অফিস হতে ক্রয় করা যাবে। সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ৩০ লক্ষ পর্যন্ত করা যাবে। মেয়াদ শেষে লাখে ৫৩,৫৮০ টাকা পাওয়া যাবে ৫ বছর পর এবং মুনাফার হার ১১.২৮%। বিনিয়োগ বাড়লে মুনাফাও কমবে।
সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে যেসব কাগজপত্র লাগবে
১. সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নির্ধারিত আবেদন ফরম৷
২. ক্রেতার ০২(দুই) কপি পাসপাের্ট সাইজ ছবি৷
৩. ক্রেতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
৪. ক্রেতার ইটিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি ((০২ লক্ষ টাকার বেশি ক্রয়ের জন্য) ।
৫. এমআইসিআর চেকেরমাধ্যমে বিনিয়ােগের টাকা পরিশােধা (০১ লক্ষ টাকার বেশি হলে)।
৬. নমিনীর ০২(দুই) কপি পাসপাের্ট সাইজ ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্রেরফটোকপি।
৭. নমিনী নাবালক হলে নমিনীর জন্মনিবন্ধন সনদ ও প্রত্যায়নকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
৮. পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য ক্রেতার পেনশন বই এর ফটোকপি এবং প্রাপ্ত আনুতােষিক এবং ভবিষ্য তহবিলের মঞ্জুরীপত্র