২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,সকাল ৮:৩৬

শিরোনাম
কয়রায় প্রতারণা করে বয়োবৃদ্ধ মহিলার বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলন  আজ তারেক রহমানের জন্মদিন দুদকের কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে স্লুইস গেটের কাজ দেয়ার পয়তারা কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে নবাগত অফিসার ইনচার্জ ইমদাদুল হকের মতবিনিময় কয়রায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন উপলক্ষে র ্যালী ও আলােচনা সভা কয়রায় মিথ্যা মামলা দি‌য়ে হয়রা‌নি করার প্রতিবা‌দে সংবাদ স‌ম্মেলন কয়রায় অজগার সাপ উদ্ধার পরে সুন্দরবনে অবমুক্তি কয়রায় যুব দিবসের আলোচনা সভায় তোপের মুখে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম কয়রায় জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের দৃশ্য বদলে যাচ্ছে

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১

  • শেয়ার করুন

 

বদলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। যানজটমুক্ত বাধাহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সড়কের চারটি স্থানে বাইপাস, একটি স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেন করতে মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষা চলছে। সড়কের চারটি স্থানে ছয় লেনের সেতু নির্মাণের কাজ অনেকটা শেষ পর্যায়ে।

যেসব স্থানে বাইপাস হবে তা হলো- পটিয়া, দোহাজারী, আমিরাবাদ ও চকরিয়া। এরমধ্যে কেরানীহাট এলাকায় বাইপাসের পরিবর্তে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। বর্তমানে বিস্তারিত জরিপের (ডিটেইলড সারভে) কাজ চলছে।

চার লেনের সড়ক ছয় লেনের সেতু :
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জুলফিকার আহমেদ জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের চারটি স্থানে ছয় লেনের সেতু হচ্ছে। এরমধ্যে চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া বরুমতি খালের উপর একটি, পটিয়ার ইন্দ্রপুল খালের উপর তিন লেনের দুটি, দোহাজারী শঙ্খ নদীর উপর তিন লেনের দুটি ও চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর উপর তিন লেনের দুটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে।

প্রকৌশলী জুলফিকার বলেন, শঙ্খ নদীর উপর নির্মিয়মান নতুন তিন লেনের সেতুর ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হলে পাশের সেতুটিও তিন লেনের করা হবে। একইভাবে ইন্দ্রপুলের সেতুটির ৫০ শতাংশ, মাতামুহুরী সেতুর ৯০ শতাংশ ও বরুমতি খালের উপর নির্মিয়মান ছয় লেনের সেতুটির ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের চার লেনের কাজ শুরু প্রসঙ্গে প্রকৌশলী জুলফিকার বলেন, চার লেন কাজের মাঠ পর্যায়ের সমীক্ষা করছে বুয়েটের একটি দল। আশা করছি আগামী ডিসেম্বর নাগাদ সমীক্ষার কাজ শেষ হবে। চারটি স্থানে সাতটি সেতু নির্মাণে খরচ পড়বে প্রায় সাতশো কোটি টাকা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ক্রস বর্ডার নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (সিবিআরএনআইপি) প্যাকেজ সি-এর আওতায় ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে।

প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের আঞ্চলিক যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সেতু প্রতিস্থাপন, ইন্টারসেকশন, বাজার, লেভেল ক্রসিং, রিজিড পেভমেন্ট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া ঢাকা থেকে কুমিল্লা (ময়নামতি) ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উন্নয়ন ডিপিপি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। শিকলবাহা ক্রসিং থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৫৯ কি.মি. এবং কক্সবাজার লিঙ্ক রোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৭৬ কি.মি.সহ মোট ২৩৫ কি.মি.সড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এডিবির অর্থায়নে সুইডিশ কনসালট্যান্ট নামে একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান উন্নতীকরণ কাজের জরিপ করেছে।

বাইপাস হবে যেখানে :
নতুন করে চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কের বাইপাস নির্মাণ প্রসঙ্গে দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, পর্যটন এলাকা কক্সবাজার, মহেশখালীর মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন করতে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রতিটি বাইপাস ৩ শ’ ফুট প্রশস্ত হবে। কেরানীহাট ফ্লাইওভার প্রশস্ত হবে ১৯৬ ফুট।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পটিয়া ইন্দ্রপুল এলাকা থেকে কমলমুন্সির হাট পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমটার বাইপাস ইতিমধ্যে ৩৮ দশমিক ২২ একর জমি নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর পটিয়া বাইপাস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়কটিতে ইতিমধ্যে যানবাহন চলাচল করছে। নতুন করে আরো জমি অধিগ্রহণ করে বাইপাসটি ৩ শ’ ফুট প্রশস্ত করা হবে।

চন্দনাইশের দেওয়ানহাট থেকে দোহাজারীর দক্ষিণ পাশের রাজমহল কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত সড়কের পশ্চিম পাশে ৪ দশমিক ৭০ কিলোমিটার দোহাজারী বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এ সড়ক নির্মাণে ১০৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
সাতকানিয়ার কেরানীহাট এলাকায় বাইপাসের পরিবর্তে ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সওজ। সাতকানিয়ার কেওচিয়া ইউনিয়নের নয়াখালের মুখ থেকে কেঁওচিয়া নয়াপাড়া এলাকা পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, ৩ শ’ ফুট প্রস্থের চার কিলোমিটার বাইপাসে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে ৮০ একরের বেশি। নয়খালের মুখ থেকে সাতকানিয়া রাস্তার মাথার দক্ষিণে নয়াপাড়া পর্যন্ত ১৯৬ ফুট প্রশস্ত চার কিলোমিটার ফ্লাইওভারে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে মাত্র চার একর। এতে খরচ অনেক কমে আসবে।
লোহাগাড়ার উপজেলার রাজঘাটা রূপসী ক্লাব থেকে সড়কের পূর্বপাশ হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান কলেজ সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার লোহাগাড়া বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এ সড়ক নির্মাণে ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। একইভাবে চকরিয়া সরকারি কলেজ থেকে সড়কের পূর্বপাশে সাত কিলোমিটার বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এতে ১৫৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পাঁচটি যানজট এলাকা চিহ্নিত করে এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এসব স্থানে অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই থাকে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এসব বাইপাস নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা। নির্মাণকাজ শেষ হলে সড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তিনি বলেন- পাঁচটি স্থান ছাড়া পটিয়ার আমজুর হাটে প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকে। সেখানে ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাবটি জাইকার কাছে বিবেচনাধীন রয়েছে।

  • শেয়ার করুন