৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,বিকাল ৩:১৫

কয়রায় ঝুকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করতে হয় সরকারি কর্মকর্তাদের

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১

  • শেয়ার করুন

 

কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের থাকার জন্য ৬টি আবাসিক ভবনের সব ক’টি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবার নিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কর্মরত কর্মকর্তারা। আবাসন সংকটের কারণে অনেক কর্মকর্তা বদলি হওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার নতুন যারা আসছেন তাদের অনেকেই একই সমস্যার কথা চিন্তা করে যোগদান না করে বদলির তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন।

ভবনগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সেই সঙ্গে ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মেঝে ও সিঁড়ির একই অবস্থা। জানালা-দরজাগুলো অধিকাংশ ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলে সব ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। অনেকেই ছাদ দিয়ে পানি পড়া ঠেকাতে পলিথিন টানিয়েছেন। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুটি ভবন সম্পূর্ণ খালি রয়েছে। অন্য চারটিতে দু-একজন করে থাকছেন।

সূত্র অনুযায়ী, ১৯৮৪ সালে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের থাকার জন্য ৬টি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর পৃথক দুটি বাংলো নির্মাণ করা হয়। এছাড়া কর্মচারীদের থাকার জন্য আলাদা ডরমিটরি ভবন রয়েছে। সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় এর ভবনগুলো নাম দেওয়া হয় সুন্দরী, গেওয়া, বাইন, কাঁকড়া, গরান, ধুন্দল ইত্যাদি। বর্তমানে এসব ভবনের কোনোটিই বাসযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। থাকার জায়গার অভাবে অনেকেই এসব ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। আবার অনেক কর্মকর্তাকে পরিবার নিয়ে বাইরে বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, আবাসন সংকটের কারণে এখানে যোগদানের পরপরই বদলির চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতে হয়। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি দপ্তরে কর্মকর্তা নেই কেবল ভালো আবাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত বলেন, সরকারি কোয়ার্টারে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় প্রথমে পরিবার নিয়ে কয়েক মাস অফিসার্স ক্লাবে থাকতে হয়েছে। এখন অফিস থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বাসা ভাড়া নিয়ে আছি। এতে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, বাইরে বাসাভাড়া তুলনামূলক বেশি এবং অফিস থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে কোয়ার্টারে থাকতে হচ্ছে। সেখানে বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। যে কারণে পরিবার আনতে সাহস পাচ্ছি না।

কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুর রহমান তালুকদার বলেন, কর্মকর্তাদের থাকার জন্য প্রতিটি ভবনই বর্তমানে পরিত্যক্ত বলা চলে। তারপরও কর্মকর্তাদের অনেকটা বাধ্য হয়েই সেখানে থাকতে হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ভবনগুলোর অবস্থা এতটা খারাপ যে সেখানে থাকার মতো পরিবেশ নেই। আমরা ভবনগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের আগামী সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

  • শেয়ার করুন