প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১
কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রা উপজেলার গ্র্যাজুয়েটস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রকল্পের মালপত্র স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মালপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে বললেও নানা অজুহাতে তারা কালক্ষেপণ করে চলেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে ওই মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এলাকার সবচেয়ে বড় এ মাঠটিতে সারাবছর বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলা হতো। করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে মাঠজুড়ে পানির ড্রাম ও বাঁশ স্তূপ করে রেখেছে সিএনআরএস নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের মালপত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে দেড় বছর ধরে মাঠটি দখল করে রেখেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও কিছু করতে পারছে না।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইব্রাহিম খলিল জানায়, এলাকার আশপাশে অন্য কোনো মাঠ না থাকায় বিকেলে অলস ঘুরে বেড়াতে হয় তাদের। মালপত্র সরাতে বললে এনজিওর পাহারাদার তাদের ভয়ভীতি দেখায় বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আব্দুস সালাম বলেন, এনজিওর মালপত্র পাহারার জন্য আলাদা লোক রয়েছে। এনজিওর লোকজনকে না পাওয়ায় তাদের মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, মাঠটিতে দীর্ঘদিন খেলাধুলা বন্ধ থাকায় এলাকার তরুণদের মধ্যে মোবাইলে গেম খেলার আসক্তি দেখা দিয়েছে। এর আগে যেসব ছেলে অবসরে মাঠেই সময় কাটাত, এখন তাদের কম্পিউটারের দোকান অথবা ক্যারম খেলে সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে। তা ছাড়া মোবাইল আসক্তিও বাড়ছে এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে। আবার অনেকেই বিপথগামী হচ্ছে বলে জানান তারা।
সিএনআরএস সংস্থার প্রকল্প ব্যবস্থাপক সরোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তারা মালপত্র রেখেছে। মালপত্র বিতরণের জন্য তালিকা তৈরিতে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় একটু দেরি হচ্ছে। শিগগির এসব সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গ্র্যাজুয়েটস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন বলেন, ওই সংস্থাটি কিছুদিনের কথা বলে এক বছরের বেশি সময় মাঠটি দখল করে রেখেছে। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে তাদের মালপত্র রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় মাঠটি আটকে রাখবে, সেটি তারা বুঝতে পারেননি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন লাবলু বলেন, এ মাঠটি এলাকার ঐতিহ্যবাহী মাঠ হিসেবে পরিচিত। সেখানে প্রতিদিন খেলাধুলায় মেতে থাকে স্থানীয় ছেলেরা। ওই মাঠটি এভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি।
ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, তারা কিছুদিন মালপত্র রাখবে বলে অনুমতি নিয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে বছর পার হয়ে গেছে। তাদের দ্রুত মালপত্র সরিয়ে নিয়ে খেলার মাঠ ফাঁকা করতে বলা হয়েছে।