২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার,রাত ৮:২৭

কয়রায় জমে উঠেছে ইউপি নির্বাচন ভোটার আকর্ষণে চলছে নানা রকম প্রতিশ্রুতি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১

  • শেয়ার করুন

 

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রার সাতটি ইউনিয়নে প্রার্থীদের প্রচারণা আর সাধারণ মানুষের আলোচনায় শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে নির্বাচন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ছুটছেন ভোট প্রার্থনার জন্য। এ মুহুর্তে অর্ধ শতাধিক প্রার্থীর প্রচার মাইক, পথসভা আর মিছিলের শব্দে দিন রাত একাকার হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ আশা করছেন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সুষ্ঠুভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন তারা।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এবারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে প্রার্থী না দিলেও স্বতন্ত্রভাবে স্থানীয় নেতা কর্মীরা অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনীত করেছেন। তবে প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নির্বাচনের আগেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠেছে। দলের স্থানীয় নেতারা অনেকেই গোপনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। এ কারণে দু’একটি ইউনিয়নে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে তারা। এর মধ্যে পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলাও হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিন বেদকাশি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সেখানে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। সাধারণ ভোটারদের ধারনা এভাবে চলতে থাকলে ইউনিয়নটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

একই অবস্থা উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। কয়রা সদরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এস,এম বাহারুল ইসলামের বিপক্ষে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলাম রবিন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এ ইউনিয়নে এ দুই জনের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ত্রিমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে স্থানীয় মানুষ ধারণা করেছেন। এদিকে মহারাজপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী থাকলেও দলের প্রভাবশালী একজন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সেখানে। তবে সাধারণ মানুষের ধারণা ইউনিয়নটিতে নৌকার প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। এছাড়া বাগালি ইউনিয়নেও দলের বাইরে ওই জনপ্রতিনিধির সমর্থিত প্রার্থী থাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ভরাডুবির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মহেশ্বরীপুর ও আমাদি ইউনিয়নে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা।

সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ না নেওয়ায় এবং দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের বাইরে থাকায় অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে কর্মী সমর্থকরা। তাছাড়া নানামুখি রাজনৈতিক চাপে কর্মী সমর্থকদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। এতে করে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন বেশী দেখা যাচ্ছে। অবশ্য ভোটের দিন পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকলে এসব ভোটারদের ভোট কোন প্রার্থীর পক্ষে যাবে এ নিয়েও যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৫ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১১০ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের ইউপি নির্বাচনে ৬৫টি ভোট কেন্দ্রে এক লাখ ৬৫ হাজার ৩১৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

  • শেয়ার করুন