২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার,সকাল ৯:৩০

শিরোনাম

লকডাউনের মধ্যে কলকারখানা খুলে দেওয়া সরকারের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত- ফখরুল

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২১

  • শেয়ার করুন

 

লকডাউনের মধ্যে হঠাত করেই রপ্তানিমুখী কলকারখানা খুলে দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘পুরোপুরি আত্মঘাতি’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “ আপনারা আজকের পত্রিকাগুলোতে দেখেছেন কী ভয়াবহ অবস্থা? কি রকম তুঘলগি কারবার- আগে বলা হলো যে, করখানা খোলা হবে না, ৫ তারিখ পর্যন্তই বন্ধ থাকবে। আবার হঠাত করেই বলা হলো কলকারখানা খোলা হবে। কি করে লোকগুলো আসবে তার কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার দেখা যাচ্ছে, রাত্রি বেলা বলছে যে, না, দুপুর ১২ টা পর্যন্ত গণপরিবহন খোলা থাকবে।”
“ আমি কি এমনি বলেছিলাম যে, এগুলো আসতেছে সব হেমায়েতপুর থেকে। আসলেই তো ! সব হেমায়েতপুরের অবস্থা। এটা বদ্ধ উন্মাদনা ছাড়া আমি কিছু দেখতে পাই না। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে যে, অযোগ্যতা, দুর্নীতি পরায়নতা এবং আন্তরিকতার চরম অভাবে এসব আত্মহরননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহন করছে। দিস ইজ টোটালি সুইসাইডাল।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “ আজকের পত্রিকা দেখে তো আপনার সন্ত্রস্ত হয়ে যেতে হয়। যেভাবে মানুষ আসছে একেবারে গাদাগাদি করে, ঘাড়ের উপর, ঘাড়ের উপরে চড়ে এবং সেভাবে এসে কিভাবে …। একবার তাদের ছুটি দিলো সব চলে গেলো। আবার ফিরছে তারা মফস্কল থেকে।”
“ এখন তো মফস্বলেই সংক্রমণ সবচেয়ে বেড়েছে। ওইগুলো নিয়ে তারা আবার ফিরে আসছে। সো উই আন্ডারস্ট্যান্ড কি হতে যাচ্ছে ঢাকাতে। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, “ সরকারেরে অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগনের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি অনেকবার বলেছে যে, দিন আনে দিন খায় মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিকসহ সকল প্রকার নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা ব্যতিত লকডাউন কখনই কার্য্কর হবে না। সেইজন্যই বিএনপি এসব মানুষদেরকে এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিলো। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।প্রকৃত দুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।”

“ উপরন্তু হঠাত করে রপ্তানী মুখী কল কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কল-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা আরো মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশে তারা হতবিহবল হয়ে উঠেছে এবং চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রায় সব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকার বাইরে এই শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগন ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হবার সম্ভাবনা বাড়ছে।”
‘টিকা নিয়ে সরকার প্রতারণা করছে’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ সরকার অবলীলায় জনগনকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারনা করছে। এদিকে সরকার বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৬০ লক্ষ টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লক্ষ টিকা দিতে পারেনি। টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে তারা(সরকার) যা জনগনের সঙ্গে প্রতারনা ব্যতিত কিছুই নয়।”
“ প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের জন্য টিকা প্রাপ্তির উতস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর টিকা নিয়ে এসব উক্তি এখন হাস্যকর। এগুলো যে ফাঁকা বুলি -এটা বুঝতে আর জনগনের কোনো বাকী নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ফাঁকা বুলি না আওরিয়ে অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষন ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগনের সামনে তুলে ধরার আহবান জানানো হয়।”

সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংক্রমন ও মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত পরিসংখ্যান না দিয়ে জনগনকে প্রতারনা করতে ‘অসত্য তথ্য’ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আরো ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. রফিকুল ইসলাম, তাইফুল ইসলাম টিপু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের(ড্যাব) অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও অধ্যাপক আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

  • শেয়ার করুন