২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার,সন্ধ্যা ৬:৩১

শিরোনাম

পরীমনি ভাগ্যবতী, ত্ব-হা’র পরিবারের সেই সৌভাগ্য হয়নি: সংসদে রুমিন ফারহানা

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১

  • শেয়ার করুন

 

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির মতো ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের পরিবারের সৌভাগ্য হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুমিন বলেন, ‘কোথায় মামলা করবো? কার কাছে মামলা করবো? কার কাছে অভিযোগ করব? কেউ তো জিডি নিতে রাজি হচ্ছেন না, কথাটি বলছিলেন ত্ব-হার (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান) স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন এবং তার সঙ্গে আরও তিন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নাই।

তিনি বলেন, একই সময় একই ধরনের অভিযোগ করতে দেখেছি নায়িকা পরীমনিকে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনি ভাগ্যবতী। কারণ তার মামলা নেয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি ত্ব-হার পরিবারের।
‘সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের আরও ৬০৪টি পরিবারের। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। তাদের ব্যাপারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলছে, না লোকাল পুলিশ স্টেশন কিছু বলতে পারছে।’

বিএনপির এই এমপি বলেন, সরকার যখন বলছে তারা পরকীয়ার টানে চলে গেছে, ঋণের বোঝা আছে, পারিবারিক কলহের জেরে চলে গেছে। তখন ২০১৯ সালের এপ্রিলে ফ্রান্সভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এফআইডিএইচ বলছে, গুমের এই ঘটনাগুলো বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়।

এগুলো যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তাদের সমন্বিত কৌশলের অংশ। এই ঘটনাগুলো নিয়মতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিপন্থি। এফআইডিএইচ বলছে যেহেতু বেশিরভাগ ভুক্তভোগীকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে টার্গেট করা হয়, তাই কাজগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ। অর্থাৎ গুমকে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে।

তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব অভিযোগগুলো তদন্ত করা। তদন্তের ভিত্তিতে তারা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে সেটা বের করা। বারবার বলা হয় বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে এই অর্থে যে, যখন কোনো ব্যক্তিকে গুম করা হয়, তার পরিবার পায় না, তখন বলে আমার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়।
তার মানে সরকারি দল না করলে সরকারি মতের সঙ্গে না মিললেই সে হাওয়া হয়ে যেতে পারে, নাই হয়ে যেতে পারে, এটাই বিরাজনীতিকরণ।

বিএনপির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ বলেন, আলেম অর্থ আমি যেটুকু বুঝি যারা কোরআন এবং হাদিসের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাকারী। আজ তারা কিন্তু সাংঘাতিক নিপীড়নের মধ্যে আছেন। আজ আমাদের যে সমস্ত আলেম এ ধরনের রিমান্ড, গ্রেফতারের সম্মুখীন হয়েছেন তাদের দয়া করে মুক্তি দিন।
তিনি বলেন, (তা না হলে) নাগরিক উদ্বেগ এবং দেশে ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে। সারা বাংলাদেশে আপনি ধর্মীয় তাফসির বন্ধ করে দিয়েছেন। গত চার দিন ধরে পত্রপত্রিকায় আসছে আমাদের একজন বিশিষ্ট আলেম মো. আদনান নিখোঁজ। তার পরিবার তার সন্ধান দাবি করছে।

বিএনপির অপর সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষের কিন্তু জীবনের নিরাপত্তা আছে। কে দল করল, কে বেদল করল সেটা দেখার বিষয় নয়, আইন সবার জন্য সমান। আমরা দেখেছি, ইসলামিক স্কলার আদনান কীভাবে নিখোঁজ হয়েছেন।

তিনি বলেন, সেই আদনানের বিষয়ে তার পরিবার বা কেউ জানছে না। পুলিশ মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করছে। কোনো মামলা নিয়ে যে তাঁর খোঁজ করবে সেটাও কিন্তু করছে না। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। পরীমণি ভাগ্যবতী যে, তার মামলা নেওয়া হয়েছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই যে, (অভিযুক্তদের) আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে।

  • শেয়ার করুন